ছদ্মনামটা তোমার পাঠকদের মনে ধরেছে? এই খেপে খেপে ইণ্টারভিউটা বেশ ভালো। একসাথে বেশিক্ষণ আমাকে সহ্য করতে হচ্ছে না। না তোমার না পাঠকের। এটা তো অনলাইনে যাচ্ছে বলেছিলে না? পড়ে কেউ! আমি তো শুনেছি ওখানে সবাই কবি। পাঠক কেউ না। দিনে সবাই দশ বারোটা লেখা লিখে ফেলে। লিখেই পোস্ট করে দেয় গ্রুপগুলোতে। আমি এসব জানতাম না। আমার মেয়ে বলে। ওই আমাকে একটা একাউণ্ট খুলে দিয়েছে। আমার আর যাওয়া হয় না। ঐ মাঝে মাঝে খুলে বলে নাকি প্রচুর ফ্রেণ্ড রিকোয়েস্ট। এতো লোক আমার কবিতা পড়ে! নাকি নামটা দেখেই চমকায়। আমি তো এখন নাম হয়ে গেছি। তাই তোমাকে বললাম নাম দিও না। একটু মন খুলে কথা বলি। এখন তো সেটাও পারি না। আমি কি বলব এখন সেটাও অনেকটা অন্যে ঠিক করে দেয়। খারাপ লাগে। কিছু করার নেই। দড়ির ওপরে দাঁড়িয়ে তুমি। ফিরে যেতে গেলেই সোজা নীচে। অনেকগুলো বাজে কথা হয়ে যাচ্ছে। তুমি তো চুপ করেই বসে রয়েছ। কিছু বলার নেই ?
-
আপনার বাউলের ওপর লেখা আছে। সেখানে আপনার
বাউল সম্পর্কে এক গভীর অনুভূতি প্রকাশ পায়। আগের বার বই মেলায় দেখলাম এক বাউল গান
গাইছে। আপনি তার থেকে একটু দূরেই বসে ছিলেন। আপনার প্রকাশকের স্টলের ভেতর। সই করে
যাচ্ছিলেন নিজের বইতে...
-
তুমি ওখানে বসে যাকে সই করতে দেখেছিলে , সে
বাউল নিয়ে কিছু লেখেনি। তার বাউল নিয়ে কোন মাথা ব্যথা নেই। সে সকালে উঠে বাজার
করে। খায়। অফিসে যায়। রাজনীতির দালালি করে। ক্ষমতা চায়। একটা সাধারণ মানুষ যা চায়
আর কি। আমি ভগবান নই। আমাকে বেঁচে থাকতে হয়। বেঁচে থাকার জন্য যা যা করতে হয় সেটা
করি। আমি ঐ স্টলে বসি বলেই লোকে ঢোকে। বই কেনে সই করাবে বলে। পড়ে কজন সন্দেহ। তা
নিয়ে মানুষটার কোন মাথা ব্যাথা নেই। তার বাড়িতে বৌ বাচ্চা আছে। তাকে রোজগার করতে
হয়। সে সই করলে বই বিক্রি হবে। প্রকাশক আরো বই ছাপাবে। মানুষটারও কিছু রোজগার হবে।
তুমি যখন ট্রেনে করে রোজ কলেজ থেকে যাও আসো, মানুষকে ধাক্কা মেরে উঠতে হয় তোমাকে।
তুমি কি ধাক্কা না মেড়ে দাঁড়িয়ে থাকো ফাঁকা ট্রেনের জন্য? থাকো না। কারণ তাতে
তোমার পারসেণ্টেজটা মিস হবে। কলেজে কি স্যার শুনবে তোমার কারণ! তোমাকে এই
সিস্টেমের সাথে মানিয়ে নিতে হয়। বইমেলায় বাউলকে উপেক্ষা করে নিজের বইতে সই করা
মানুষটাকেও মানিয়ে নিতে হয়।