71st pOsT : মুখোমুখি রত্নাকর (তৃতীয় অংশ) / মৃগাঙ্কশেখর গাঙ্গুলী

বাঙলা সাহিত্যের প্রায় প্রতিটি পুরষ্কারই আপনার পাওয়া হয়ে  গেছে। পুরষ্কার ব্যাপারটা কেমন লাগে?
পুরষ্কার খ্যাতি বাড়াতে লাগে। বইয়ের বিক্রিও বাড়ে। তাতে নিজের সাহিত্যের মানের কোন পরিবর্তন হয় না। পুরষ্কার পাওয়ার জন্য তো লিখতে বসা না। লেখার পর সেটা একটা মানে পৌছলে তখন পুরষ্কৃত হয়। 
সব সময় কি লেখার মানটাই পুরষ্কার এনে দেয়?
কি বলতে চাইছ বুঝতে পারছি। না ঘরে বসে থাকলে পুরষ্কার আসে না। এটা সাফ কথা। তার জন্যও কিছু প্রক্রিয়া থাকে। শুধু লিখে গেলেই চলে না। তাহালে আরো অনেকের ভাগ্যেই পুরষ্কার জুটতো। তবে নিজের কবিতা অনেক সংখ্যক পাঠকের কাছে পৌঁছে দিতে গেলে এটা প্রয়োজন। শুধু নিজের জন্য তো লিখি না। পাঠকের কাছে পৌঁছতেও চাই। অনেক কবি থাকেন যারা কিছুটা অন্তর্মুখী। তারা এই প্রচারটা নিজে থেকে করতে পারেন না। লাজুক প্রকৃতির। কিন্তু প্রচার তো কোন দোষের কিছু না। একটা সিনেমা বেরোলে তারও তো প্রচার করা হয়। যে সকল সাহিত্যিক বা শিল্পীর নাম আমরা জানি তারা প্রচার পেয়েছেন বলেই উঠে এসেছেন। তবে শুধু তো প্রচার দিয়ে হয় না লেখার মানও ভাল থাকতে হয়। 
একটা লিটিল ম্যাগাজিন থেকে লেখা চাইল আর একটা বাণিজ্যিক পত্রিকা থেকে। হয় তো লিটিল ম্যাগাজিনটি অনেক দিন ধরে অনেক বার করে লেখা চেয়েছে। আপনার কাছে অপ্রকাশিত লেখা নেই বলে দিতে পারেন নি। নতুন একটা লেখা লিখে কাকে দেবেন? 
বাণিজ্যিক পত্রিকাটিকে। আমি লিখে খাই। এছাড়া যেখানে বেশি সংখ্যক পাঠকের কাছে পৌঁছব সেখানেই তো লিখব। একটা লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কজন মানুষের কাছে পৌঁছব! আর আগে বড় পত্রিকার সম্পাদকেরা লিটিল ম্যাগাজিন পড়তেন। ভাবতেন কি করে পত্রিকার মান উন্নত করা যায়। এখন পড়েন না। তাদের কে বিক্রি কি করে বাড়বে তা নিয়ে মাথা ঘামাতে হয়। ম্যানেজমেন্ট চাপ দেয়। কি ভাবে এড্‌ বেশি আসবে ভাবতে হয়। পুরো বিষয়টাই বাণিজ্যিক হয়ে গেছে। সেখানে তো আবেগ প্রবণ হয়ে লাভ নেই। তাহালে তো না খেয়ে মরতে হবে। 

অথচ আপনি তো লিটিল ম্যাগাজিনে লিখেই উঠেছেন...

তখন সবে মাত্র লেখা শুরু করেছি। হাত পাকানোর জন্য লিটিল ম্যাগাজিন ঠিক আছে। কিন্তু আমার নাম হয়েছে বাণিজ্যিক পত্রিকাতে লিখেই।